রেস্টেড না ড্রপড্?

উৎপলশুভ্রডটকম

১৭ নভেম্বর ২০২১

রেস্টেড না ড্রপড্?

মুশফিকুর রহিম বাদ, নাকি তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে? সিনিয়র কোনো ক্রিকেটারকে বাদ দিলে ব্যাপারটাকে ভদ্রস্থ করার জন্য ‘বিশ্রাম’-এর কথা বলার একটা রেওয়াজ আছে। মুশফিকের ঘটনাও কি তা-ই?

পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা করে বিসিবির দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বকাপ দলের সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস ও রুবেল হোসেনের না থাকার কারণ হিসেবে সরাসরি বাদ পড়ার কথা বলা হয়েছে। সাকিব আল হাসান ও সাইফউদ্দিনের না থাকার কারণ হিসেবে ইনজুরি। শুধু মুশফিকুর রহিমের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে, তাঁকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। যদিও দল থেকে তাঁর বাদ পড়ার খবর আগেই মিডিয়ায় চাউর হয়ে গিয়েছিল।

আসলেই বিশ্রাম, নাকি বাদ? খোঁজখবর নিয়ে যা জানা গেল, তাতে দুটিই বলতে পারেন। সেটি আবার কী রকম? কোনো সিরিজে কারও ব্যাপারে ‘রেস্টেড’ বললে সাধারণত ধরে নেওয়া হয়, ওই ক্রিকেটার নিজেই বিশ্রাম চেয়েছেন। মুশফিকুর রহিমের ঘটনা তা না। তিনি বিশ্রাম চাননি, তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে যা জানা গেল, তা হলো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে মুশফিকের কাছ থেকে সেরাটা পেতেই নির্বাচকদের এই সিদ্ধান্ত। বিশ্বকাপের কালো ছায়া মাথায় নিয়ে শুরু হচ্ছে এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ, যাতে খারাপ করলে মুশফিকের ওপর চাপটা আরও বেড়ে যাবে। যেটির জের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরপরই শুরু টেস্ট সিরিজেও গড়ানোর আশঙ্কা তো আছেই। 

যে টেস্ট সিরিজ এমনিতেই বাংলাদেশের জন্য বড় এক পরীক্ষার নাম। প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের পুরো শক্তির দল, আর বাংলাদেশ তামিম ইকবালকে হারিয়ে অনেকটাই হীনবল। সাকিব আল হাসানের খেলার কথা থাকলেও তা নিয়েও নাকি ক্ষীণ অনিশ্চয়তা আছে। শেষ পর্যন্ত যদি ওই অনিশ্চয়তাটাই সত্যি হয়ে ওঠে, তাহলে টেস্ট ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের গুরুত্বটা আরও বেড়ে যাবে। ব্যাটিং লাইন আপে অধিনায়ক মুমিনুল ও মুশফিক ছাড়া বলার মতো অভিজ্ঞতা কই?

আনুষ্ঠানিক দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন অবশ্য শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের কথাই বলেননি, বলেছেন টানা চারটি টেস্ট ম্যাচের কথা। পাকিস্তান সিরিজ শেষ হতে না হতেই বাংলাদেশ উড়াল দেবে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে। পরের দুটি টেস্ট ম্যাচ সেখানেই। এই চারটি টেস্ট ম্যাচে তরতাজা মুশফিককে পেতেই নাকি তাঁকে 'বিশ্রাম' দেওয়ার সিদ্ধান্ত।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিব ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের পারফরম্যান্সই সেভাবে বলার মতো না। যে কারণে ৮ ম্যাচে মুশফিক মাত্র ১৪৪ রান করার পরও দেখা যাচ্ছে, তাঁর চেয়ে বেশি রান করেছেন শুধু দুজন--মাহমুদউল্লাহ (১৭৪) ও নাঈম (১৬৯)। আট ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের হাফ সেঞ্চুরি মাত্র চারটি, তার একটি মুশফিকের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা জিততে পারলে হয়তো ওই অপরাজিত ৫৭ অন্য মূল্য পেত।

বিশ্বকাপ-বিপর্যয়ের পর টি-টোয়েন্টি দল ঢেলে সাজানোর যে একটা রব উঠেছিল, তার কিছুটা তো প্রতিফলিতই এই দলে। বিশ্বকাপের দলে পরিবর্তন হয়েছে ৬টি। যাঁরা এসেছেন, তাদের মধ্যে চারজনই এর আগে কখনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেননি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলী ও পেসার শহিদুল ইসলাম তো এবারই প্রথম ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। ইয়াসির রাব্বি এর আগে একাধিকবার টেস্ট দলে থাকলেও এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায়। সাইফ হাসান টেস্ট খেললেও টি-টোয়েন্টি দলে এই প্রথম। নাজমুল হাসান শান্ত ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের জন্য এটি দলে ফেরা। স্ট্যান্ড বাই হিসেবে বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে গেলেও টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিপ্লবকে। শান্ত এর আগে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে রান করেছেন ১১, ৫ ও ৮। সর্বশেষ খেলেছেন গত এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অকল্যান্ডে। 

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×