টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

বড় পাঁচ আপসেটে বাংলাদেশের দুই

উৎপলশুভ্রডটকম

১৮ অক্টোবর ২০২১

বড় পাঁচ আপসেটে বাংলাদেশের দুই

ম্যাচের আগে হয়তো সবাই ধরে নিয়েছিল স্কটল্যান্ডকে সহজে হারাবে বাংলাদেশ। কিন্তু তা হয়নি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক আপসেট জন্ম নিল স্কটিশদের বীরত্বে। আর তাদের রোমাঞ্চকর জয়ের সঙ্গে উঠে এল ২০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপের আপসেটগুলো। বাংলাদেশের ভক্ত হিসেবে আপনার ভালো না লাগলেও সেরা পাঁচ আপসেটের গল্প শোনার সময় এখন।

১.
ইংলিশদের চমকে দিয়ে ডাচদের রূপকথা

২০০৯ বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ডের আপসেটের শিকার হওয়া দিয়েই। ‘হোম অব ক্রিকেট’ লর্ডসে লেখা হয়েছিল ডাচ রূপকথার গল্প। ইংলিশদের অহং গুঁড়িয়ে দিয়ে ৪ উইকেটের অসাধারণ এক জয় তুলে নিয়েছিল ডাচরা। আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৬২ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের শেষ বলে ২ রান তুলে রুদ্ধশ্বাস এক জয় পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ৩০ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরার পুরস্কার পাওয়া টমি ডি গ্রুথ বলেছিলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমরা কিছু অর্জনের লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম। এটা তার একটা। লর্ডসে খেলতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম ২০১১ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করতে। চাওয়া ছিল বড় এক দলকে হারানোর। আমরা তা করে ফেললাম।’ এরপর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল হল্যান্ড। সেবার জয়টা ছিল ৪৫ রানের।

২.
জিম্বাবুয়ের ধাক্কায় মাটিতে অস্ট্রেলিয়া

টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপে ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। তখন ওয়ানেডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারা। কিন্তু ২০০৭ সালে কেপটাউনে জিম্বাবুয়ের ধাক্কায় মাটিতে লুটিয়ে পড়তে হয় তাদের। ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে আপসেট ঘটায় জিম্বাবুয়ে। অস্ট্রেলিয়াকে ৯ উইকেটে ১৩৮ রানে বেঁধে ফেলেছিল তারা। এল্টন চিগাম্বুরা ও গ্যারি ব্রেন্ট মিলে ৫ উইকেট নেন। এরপর ৪৫ বলে ৬০ রানের ম্যাচ উইনিং এক ইনিংস খেলেন ব্রেন্ডন টেলর। রোমাঞ্চকর সেই খেলায় শেষ ২ বলে জিম্বাবুইয়ানদের দরকার ছিল ৪ রান। পঞ্চম বলে লেগবাই থেকে আসা ৪ রানে তাদের গল্প করার মতো জয়টা নিশ্চিত হয়। 

৩.
চ্যাম্পিয়নদের বধ করেছিল আফগানরা

২০১৬ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু  গ্রুপ পর্বে সেই্ ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই হারিয়ে দিয়েছিল আফগানিস্তান। আফগানদের সেই জয়ও বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান ডিফেন্ড করে। ম্যাচ-সেরার স্বীকৃতি পাওয়া নাজিবুল্লাহ জাদরান ৪০ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংসে ৭ উইকেটে ১২৩ করেছিল আফগানিস্তান। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার্ড হিটিং সব ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেন আফগান স্পিনাররা। তারপরও জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১০ রান। প্রথম দুই বল ডট দেওয়ার পরের বলে উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ নবী। ৩ বলে ১০ রানের হিসাব আর মেলানো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। শেষের রোমাঞ্চে ৬ রানের হার মেনে নিতে হয় তাদের।

৪.
বাংলাদেশের বিপক্ষে পুঁচকে হংকংয়ের স্বপ্নের দিন

কল্পনাকে হার মানিয়ে এক বীরত্বগাথা লিখেছিল ক্রিকেট বিশ্বের পুঁচকে এক দল হংকং। ঘটনা ২০১৪ বিশ্বকাপের, ম্যাচটা হয়েছিল চট্টগ্রামে। স্বাগতিকরা ধারে-ভারে সবকিছুতে এগিয়ে। ওদিকে হংকং নেপালের সঙ্গে ৮০ রানে আর আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে বসে আছে। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়ে নেওয়া দলটি কি না ২ উইকেটের জয় তুলে নেয় টাইগারদের বিপক্ষে। দুই স্পিনার নাদিম আহমেদ (৪-২১) ও নিজাকাত খানের (৩-১৯) বোলিংয়ে বাংলাদেশ ১৬.৩ ওভারে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১০৮ রানে। ২ উইকেট হাতে রেখেই যা টপকে যায় বাংলাদেশ। ইরফান আহমেদ (২৮ বলে ৩৪) ও মুনির দার (২৭ বলে ৩৬) সেই জয়ে রেখেছিলেন বড় ভূমিকা।

৫.
স্কটিশদের সামনে হতভম্ব বাংলাদেশ

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনের আপসেটের স্মৃতি তো এখনো টাটকাই। ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও ৯ উইকেটে ১৪০ রান তুলেই একটা লড়াইয়ের ঘাোষণা দিয়েছিল স্কটিশরা। অলরাউন্ডার ক্রিস গ্রিভসের অলরাউন্ড নৈপুণ্য বড় ভূমিকা রেখেছে স্কটল্যান্ডের জয়ে। যার প্রথম অংশটা এসেছে ব্যাটিংয়ে। ২৮ বলে ৪৫ রানের এক ইনিংস খেলে তিনিই স্কটল্যান্ডকে সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচান। তাতেও লড়ার মতো স্কোর হয়েছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। লেগ স্পিনে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি উইকেট তুলে নিয়ে বোলিংয়েও নির্ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন গ্রিভস। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হয় চরম হতাশা দিয়ে।

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×