পেলের মুখে পেলের হাজারতম গোল

উৎপলশুভ্রডটকম

২০ নভেম্বর ২০২১

পেলের মুখে পেলের হাজারতম গোল

ছবিটাই বলে দিচ্ছে সব

গোলসংখ্যা নিয়ে পরে বিতর্ক হয়েছে। যত না গোলসংখ্যা নিয়ে, তার চেয়ে যে ম্যাচগুলোতে গোল, সেই ম্যাচগুলোর মর্যাদা নিয়ে। তবে তারপরও পেশাদার ফুটবলে এক হাজার গোল করার প্রথম কীর্তিটা ইতিহাসে লেখা আছে পেলের নামেই। পেলের মুখেই শুনুন সেই গোলের পটভূমি এবং শেষ পর্যন্ত তা করার গল্প।

১৯৬৯ সাল, গ্রীষ্ম ও শরৎ প্রায় শেষ, সবার আগ্রহের কেন্দ্রে আমার ১০০০ গোলের মাইলফলক, যা এর আগে কেউ অর্জন করেনি। এটা হয়ে উঠল বছরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া সবাই যেন শুধু এই বিষয়েই কথা বলছে। সান্তোসের প্রতিটি খেলায় সাংবাদিকরা দলবলে ছুটে আসতে শুরু করল।

অক্টোবরেই আমি পৌঁছে গেলাম ৯৮৯ গোলে। পর্তুগিজের সাথে করা চার গোলে আমি পৌঁছে যাই মাইলফলকের আরও কাছে। যার ফলে প্রতিটি খেলায় চাপ বাড়তে লাগল, এমনকি সমর্থক ও সাংবাদিকরাও এই চাপ অনুভব করছিল।

সপ্তাহের শেষের দিকে করলাম আরও দুই গোল। এই দুই গোলের পরে মনে হয়েছিল মাইলফলক ছোঁয়া থেকে হয়তো কিছু ম্যাচ দূরে আছি। যেহেতু এক ম্যাচে আমার পাঁচ গোল করার রেকর্ডও আছে, ভেবেছিলাম হয়তো পরের ম্যাচেই মাইলফলকটা ছুঁয়ে ফেলব। যদিও আমার স্কোরিং রেট অনেকটা কমে যেতে শুরু করেছিল।পরের ম্যাচেই আমরা গোলশূন্য ড্র করি। তবে ফ্ল্যামেঙ্গোর বিপক্ষে আমি আবারও গোলের দেখা পাই। তবে তখনও ছিলাম চার গোল দূরে!

জালে যাচ্ছে বল, পেলের হাজারতম গোল

নভেম্বরে সান্তা ক্রুজের সাথে খেলতে পৌঁছে গেলাম রেসিফে। সব মিডিয়ার দৃষ্টি তখন ব্রাজিলের উত্তর পূর্বের এ শহরে। আমি কাউকেই হতাশ করলাম না। করলাম জোড়া গোল। ম্যাজিক নাম্বার থেকে মাত্র দুই গোল দূরে।পত্রপত্রিকাগুলোও তখন ভুগছে প্রবল উন্মাদনায়। তারা বলতে শুরু করল, ১০০০ গোল আমাকে অমর করে দেবে। অবশ্যই অর্থহীন কথা,তবে আমার ওপর চাপ বাড়তে শুরু করল।

বোটাফোগোর সাথে পরবর্তী ম্যাচ খেলতে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল পারাইবার রাজধানী জোয়াও পসাও।সেখানে পৌঁছে যে দৃশ্য দেখালাম, তা স্রেফ অবিশ্বাস্য। হাজার-হাজার মানুষে এয়ারপোর্ট পা ফেলবার জায়গা নেই। তাদের দেখে মনে হলো, আমি ইতিমধ্যে মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছি এবং তারা আমার এ অর্জন উদযাপন করছে। আমাকে জোয়াও পসাওয়ের নাগরিকত্ব দেওয়া হলো। তারা নিশ্চয়ই চেয়েছিল, আমি যেন এই মাঠে আমার হাজার গোলের দেখা পাই।

খেলা শুরু হবার কিছুক্ষণের মধ্যেই সান্তোস ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরই আমরা একটা পেনাল্টি পেলাম। আমি ভাবতে লাগলাম, রেফারি কি ইচ্ছে করেই আমাদের পেনাল্টি দিল!

আমি সবসময়ই সান্তোসের ব্যাকআপ গোলকিপার ছিলাম। তাই গোলকিপারের ইনজুরিতে আমাকে ম্যাচের বাকি সময়ে গোলকিপিং করতে হয়েছিল।

দর্শকরা 'পেলে' 'পেলে' বলে চিৎকার শুরু করল। কিন্তু আমি দলের নিয়মিত পেনাল্টি টেকার ছিলাম না।ক্যারিয়ারে কিছু পেনাল্টি আমি নিলেও ব্রাজিল কিংবা সান্তোসে কখনই আমি পেনাল্টির জন্য প্রথম পছন্দ ছিলাম না। আমি সবসময়ই বলেছি, পেনাল্টিগুলো নিলে হয়তো আমার ১০০০ গোল আরও আগেই হয়ে যেত!

সাধারণত কার্লোস আলবার্তো সান্তোসের হয়ে পেনাল্টি নিত। কিন্তু আজ সে পেনাল্টি নিতে অস্বীকৃতি জানাল।দলের সবাই আমাকে বলল, আমি পেনাল্টি না নিলে দর্শক আমাদের মাঠ থেকে বের হতে দেবে না। তাই আমি বাধ্য হলাম। দর্শকরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ল। যে আশা নিয়ে তারা মাঠে এসেছিল, ভাবল, হয়তো তা আজ পূরণ হবে।

কিন্তু বিপত্তিটা বাধল তখনই। আমাদের দলের গোলকিপার জেয়ার এস্টেভাও মাঠে পড়ে ব্যথায় কাতরাতে লাগল। ইনজুরির কারণে সে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল। তখনকার সময়ে সাবস্টিটিউট করার নিয়ম ছিল না।আমি সবসময়ই সান্তোসের ব্যাকআপ গোলকিপার ছিলাম। তাই গোলকিপারের ইনজুরিতে আমাকে ম্যাচের বাকি সময়ে গোলকিপিং করতে হয়েছিল। দর্শক যেটি দেখতে মাঠে এসেছিল, তার দেখা পেলো না (যদিও আমার উচ্চতা খুব বেশি নয়, তারপরও আমি ভালো গোলকিপার ছিলাম। ব্রাজিলের হয়ে একবার ও সান্তোসের হয়ে চারবার গোলকিপিং করলেও অনুশীলন নিয়মিতই চালিয়ে যেতাম।)

গোলকিপিং অনুশীলনে পেলে

যদিও আমার মনে নেই, কিন্তু আমার টিমমেটরা এখন বলে, খেলা শুরু হবার আগেই নাকি কোচ বলেছিল, গোল করা খুব সহজ হলে গোলকিপার ইনজুরিতে পড়বে এবং পেলে গোলকিপিং করবে। আমি জানি না এটা সত্যি কি না, কিন্তু মাঠে তো তাই হয়েছে। অনেকেই সন্দেহ করেছিল, রিও কিংবা সাও পাওলোতে আমার হাজারতম গোল করাতে ইনজুরির ঘটনাটা পুরোটাই ছিল নাটক। যদিও আমি এমন কখনই ভাবিনি, আমি বরং চেয়েছিলাম, যত দ্রুত সম্ভব ১০০০ গোলের মাইলফলক ছুঁতে।

পরবর্তী ম্যাচ সালভাদরে বাহিয়ার বিপক্ষে। এটা ছিল সান্তোসের এই সফরের শেষ ম্যাচ। সেখানে যা হলো, এমন দৃশ্য আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। পুরো রাস্তায় ছিল গাড়ির সমারোহ, পুরো শহরই সেজেছিল উৎসবের আমেজে। আমার গোল নিয়ে সব দর্শকই খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিল। পুরো স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। 

প্রত্যাশার চাপ বেড়েই চলছে। আমি আর অপেক্ষা করতে চাইছিলাম না। অপেক্ষার পালা শেষ করতে দুটি সুযোগও পেয়েছিলাম। প্রথমবার ক্রসবারে লাগলেও দ্বিতীয়বার আরও বড় সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এক ডিফেন্ডার আমার গোলপোস্টে নেয়া শট প্রতিরোধ করে। আশ্চর্যজনকভাবে তাকে উৎসাহ দেবার পরিবর্তে (স্বাগতিক) দর্শকরা স্লেজ করতে শুরু করে। যা আমার কাছেই কল্পনাতীত। আমার মনে হয় না, ফুটবল ইতিহাসে আগে কখনো এমন হয়েছে কিংবা পরেও হবে।

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আমার ভয় লাগতে শুরু করল। এত বড় দায়িত্ব আমি আগে অনুভব করিনি। আমি কাঁপছিলাম।

পরবর্তী ম্যাচের জন্য তিন দিনের অপেক্ষা। মারাকানায় ভাস্কোর বিপক্ষে লড়াই। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ। তারিখ ছিল ১৯ নভেম্বর, এই দিনটা ছিল ব্রাজিলিয়ানদের জন্য বিশেষ কিছু,  কারণ ব্রাজিলে ১৯ নভেম্বর জাতীয় পতাকা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

মারাকানায় প্রায় প্রত্যেক দর্শকই আমার গোলের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু ভাস্কোর প্লেয়াররা দারুণ লড়াই করছিল।এমনকি তারা আমাকে স্লেজিংও করতে ভোলেনি। 'আজকে নয়' বলে তারা মাঠেই হাসাহাসি করা শুরু করল।আমাকে আটকানোর জন্য তারা তাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি ভাস্কোর আর্জেন্টাইন গোলকিপারও তখন ছিল দারুণ ফর্মে। কিন্তু হঠাৎ করেই হেডের জন্য পারফেক্ট একটা ক্রস আমার দিকে আসছিল, তখন মনে হয়েছে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলল। কিন্তু ভাস্কোর একজন খেলোয়াড় গোল বাঁচাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসল। যদিও আমাকে গোল করতে না দিয়ে নিজেদের জালে নিজেরা গোল দেওয়াও তাদের জন্য সুখকর ছিল!

ঠিক করলাম, আমাকে কিছু করতেই হবে। এবং আমি করেছিলাম। বল নিয়ে বক্সের দিকে ছুটতেই ফাউলের শিকার হলাম। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাল। পেনাল্টি নিয়ে কিছুটা প্রতিবাদ হলেও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বহাল রাখলেন রেফারি। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আমার ভয় লাগতে শুরু করল। এত বড় দায়িত্ব আমি আগে অনুভব করিনি। আমি কাঁপছিলাম।

সতীর্থরা আমাকে শট নেওয়ার জায়গায় একা রেখে বক্সের বাইরে গেল। আমি ধীর গতিতে দৌড়ে গিয়ে বলে শট নিলাম। যা নেওয়ার আগে আমি একটু দিক পরিবর্তন করলাম। পোস্টের যেদিকে গোলরক্ষক থাকে না, সেদিকে শট নেওয়াই পেনাল্টির আসল সৌন্দর্য। 

গোলরক্ষক সাধারণত বলের গতিপথ অনুমান করার চেষ্টা করে। অন্যদিকে পেনাল্টি গ্রহণকারী গোলরক্ষককে বিভ্রান্ত করে ভিন্নদিকে শট নিতে চেষ্টা করে। ১৯৫৯ সালে একটা ট্রেনিং সেশনে আমি দিদিকে পেনাল্টি নেওয়ার একটা পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে দেখেছিলাম। সে বলের কাছে দৌড়ে গেল, কিন্তু হঠাৎ থেমে গিয়ে গোলরক্ষকের গতিবিধি খেয়াল করে সেকেন্ডের ব্যবধানে ভিন্ন দিকে শট নিল। গোলরক্ষক নড়ার আগেই শটা নেওয়ার নিয়মের সাথে কিছুটা সাংঘর্ষিক হলেও আইডিয়াটা আমার চমৎকার লেগেছিল। আসলে তো বলে কিক করার আগেই গোলরক্ষক মুভমেন্ট শুরু করে। ফলে কিক নেওয়ার আগে ওটা দেখে নিতে পারলে সুবিধাজনক অবস্থায় অবস্থায় থাকা যায়।

আমি এই আইডিয়ার কৃতিত্ব দিদিকে দিলেও তিনি কোনো অফিসিয়াল ম্যাচে পদ্ধতিটা ব্যবহার করেনি। তবে আমি করেছিলাম। ব্রাজিলে এটা 'প্যারাদিনহা'  বা একটু থামা নামে পরিচিতি পায়। কারণ আমি সবসময় বল পর্যন্ত দৌড়ে আসতাম, এরপর অল্প থেমে দেখতাম এবং এরপর বলে কিক করতাম। গোলরক্ষকরা এটার বৈধতা নিয়ে অভিযোগ করল। ১৯৭০ সালে ফিফা 'প্যারাদিনহা' বাতিল করল। যদিও এখনকার ম্যাচ অফিসিয়ালরা এখন এ বিষয়ে অনেকটা নমনীয় এবং এখন অনেক খেলোয়াড়কে এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে দেখি।

ফিরে যাই ১৯৬৯ সালের ১৯ নভেম্বর সান্তোস বনাম ভাস্কো ম্যাচে। আমি বলের কাছে দৌড়ে গেলাম, 'প্যারানদিনহা' অনুসরণ করেই মারলাম বলে।

গোওওললললললললল!

হাজারতম গোলের পর জালের বলে পেলের চুমু

আমি পোস্টের জালের কাছে সোজা দৌড়ে গিয়ে বলটা কুড়িয়ে নিয়ে চুমু খেলাম। স্টেডিয়াম ততক্ষণে আনন্দ আর উল্লাসে ফেটে পড়েছে। হঠাৎ সাংবাদিক আর রিপোর্টারদের বড় একটা দল আমাকে ঘিরে ফেলল। তাঁরা মাইক্রোফোন আমার মুখের সামনে ধরল। আমি গোলটি ব্রাজিলের শিশুদের জন্য উৎসর্গ করলাম।

আমি বললাম, আমাদের 'ক্রিনচাসহাস' বা ছোট শিশুদের দেখভাল করতে হবে। এরপর আমি কেঁদে ফেললাম। কেউ একজন আমাকে তাঁর কাঁধে তুলে নিল আর আমি বলটা মাথার উপর উঁচিয়ে ধরলাম। খেলা প্রায় ২০ মিনিট বন্ধ ছিল, যেহেতু সেখানে অনেক কিছুই ঘটছিল। কিছু ভাস্কোর সমর্থক আমার কাছে দৌড়ে এসে ১০০০ নম্বর খচিত একটা টি শার্ট উপহার দিল। 

আমি কেন 'ক্রিনচাসহাস' এর কথা উল্লেখ করলাম? সেদিন আমার মায়ের জন্মদিন ছিল এবং গোলটি তাঁকে উৎসর্গ করা উচিত ছিল। আমি জানি না সেটা আমার মাথায় না এসে তাৎক্ষণিকভাবে কেন বাচ্চাদের ভাবনা মাথায় এলো।

কয়েক মাস আগে সান্তোসের একটা ঘটনা আমার মনে পড়ে গেল। সেদিন ট্রেনিং সেশন থেকে একটু আগেভাগে বেরিয়ে দেখলাম, কয়েকটা বাচ্চা আমার গাড়ির পাশে রাখা আরেকটি গাড়ি চুরি করার চেষ্টা করছে। ছোট ছোট বাচ্চা। যারা গাড়ি পরিষ্কার করে, বিনিময়ে কিছু পয়সা পায়।

আমি তাদেরকে বাধা দিয়ে বললাম, 'তোমরা কেন গাড়ি চুরি করছ?' তারা আমাকে চিন্তিত হতে নিষেধ করে বলল, তারা সাও পাওলোর নাম্বার প্লেট লাগানো গাড়ি চুরি করছে। আমি বললাম, তোমরা কোনো জায়গার গাড়িই চুরি করতে পারো না এবং তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বললাম।

ঘটনার পরে ব্রাজিলের শিশুদের বেড়ে ওঠার সমস্যা নিয়ে আমার এক টিমমেটের সাথে আলোচনা করলাম। আমি বাচ্চাদের শিক্ষা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। এজন্য হয়তো গোল করার পর তাদের কথাই আমার মাথায় এসেছিল।

আমার ধারণা আমি কী বলতে চেয়েছিলাম, তা অনেক মানুষই বোঝেনি। অনেকে আমার সমালোচনা করল, আমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের অপবাদ দেওয়া হলো। কেউ কেউ ভাবল, আমি বলার জন্য বলেছি। কিন্তু এসব নিয়ে আমি মাথা ঘামাইনি। আমাদের মতো মানুষদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষার বার্তা সকলের নিকট পৌছে দেওয়া। শিক্ষা ছাড়া বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এখন ব্রাজিলের দিকে তাকালে দেখা যাবে, শহরে আবাসহীনতা আর গ্যাং সংস্কৃতি সমস্যা থেকে বাচ্চাদেরকে বের করে আনার চেষ্টা চলছে। এখন মানুষজন বলছে, পেলেই ঠিক। 

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×