এই ইতালিকে রুখবে কে?

এই ইতালিকে রুখবে কে?

গ্রুপ পর্বের টানা তিন ম্যাচেই জয়, তাদের সাত গোলের বিপরীতে প্রতিপক্ষ গোল করতে পারেনি একটিও। ছুঁয়েছে নিজেদের ইতিহাস-সর্বোচ্চ টানা ৩০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডও। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ফেবারিটের কাতারে ইতালিকে না রাখলেও এখন তাদের সে তালিকায় জায়গা দিতেই হচ্ছে। জাগছে প্রশ্নও, রবার্তো মানচিনির ইতালিকে রুখবে কে!

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দেখতে হচ্ছিল এমন দিনও, ইতালিকে ফেবারিট নয়, ফেলা হচ্ছে 'ডার্ক হর্স'-এর কাতারে। টানা দুটো বিশ্বকাপে বাদ পড়েছিল গ্রুপ পর্বে, ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বই তো উতরাতে পারেনি, ইউরোর বাছাইপর্ব ভালোয় ভালোয় পার করলেও সম্ভাব্য শিরোপাজয়ীর তালিকায় তাদের রাখতে তাই বাধো-বাধো ঠেকছিল অনেকেরই। তবে গ্রুপ পর্ব শেষ হতে না হতেই ইতালিকে ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে হট ফেবারিটের তালিকায়। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে ৭ গোল দিয়ে আর ১টি গোলও হজম না করে ইতালি উঠে গিয়েছে দ্বিতীয় পর্বে।

চিরাচরিত কাতেনাচ্চিও নয়, বরং রবার্তো মানচিনির অধীনে এবারের ইউরোতে দেখা মিলছে প্রাণোচ্ছ্বাসে ভরপুর এক দলের। কোনোরকমে এক গোল বের করে রক্ষণে খিল এঁটে বসে থাকাতে যে বিশ্বাসী নয় এই দল, তার প্রমাণ মিলেছিল প্রথম দুই ম্যাচেই। ইউরো এবং বিশ্বকাপ মিলিয়ে ইতালি এর আগে ম্যাচ খেলেছিল ৯৪টি, তাতে তিন গোলের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল মাত্র দুইবার। এবার ইউরোর প্রথম দুই ম্যাচেই সংখ্যাটা হয়ে গেল চার। ২০০৬ বিশ্বকাপ জয়ের পথে যেখানে জোড়া গোল করেননি দলের কোনো খেলোয়াড়, সেখানে প্রথম দুই ম্যাচেই জোড়া গোল পেয়েছিলেন চিরো ইম্মোবিলে আর ম্যানুয়েল লোকাতেল্লি।

গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জয়ের নায়ক পেসিনা, শুরুতে যিনি ২৬-সদস্যের স্কোয়াডেই ছিলেন না। ছবি: উয়েফা

দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে বলে মানচিনি ওয়েলসের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে বাজিয়ে দেখেছেন বেঞ্চের খেলোয়াড়দের। টুর্নামেন্টে যে ২৬ খেলোয়াড় নিয়ে এসেছে ইতালি, এক মেরেট ছাড়া মানচিনি মাঠে নামার সুযোগ করে দিয়েছেন সবাইকেই। জয় আটকায়নি তাতেও। শুরুতে যে পেসিনার জায়গা হয়নি প্রাথমিক স্কোয়াডেই, তাঁর একমাত্র গোলেই জয় পেল ইতালি। আরও একবার জাল অক্ষত রেখে টানা ১১ ম্যাচ গোল না হজমের কৃতিত্ব দেখাল মানচিনির শিষ্যরা।

৩৯ মিনিটে পেসিনার গোলের পর মানচিনি আর পরাজয়ের শঙ্কা করেছিলেন বলে মনে হয় না। অন্তত পরিসংখ্যানটা তাঁর জানা থাকলে হেরে যাওয়ার দুশ্চিন্তা করার তো কোনো মানেই হয় না। প্রথমে গোল করেও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ইতালি হেরেছে, এমন ঘটনা শেষবার ঘটেছে ২০১৩ সালের জুনে। সেবার ব্রাজিলের বিপক্ষে কনফেডারেশনস কাপের ম্যাচে ৪-২ হেরে গিয়েছিল আজ্জুরিরা। এরপর থেকে ৫১ ম্যাচ খেলে ৩৯ জয়ের বিপরীতে ড্র করেছে ১২ ম্যাচে।

শেষ ৩০ ম্যাচে ইতালি, নেই কোনো পরাজয়ের লাল কালি। ছবি: স্কোয়াকা ফুটবল

এ নিয়ে টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত রইল ইতালি। এতেই নাম লেখাল ভিক্টোরিও পোজ্জোর ইতালির পাশে। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে টানা ৩০ ম্যাচ না হারার রেকর্ড গড়েছিল ওই দল। পরের ম্যাচেও অজেয় থাকতে পারলে কিয়েলিনিরা তাই গড়বেন নতুন ইতিহাস।

নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা অপরাজিত থাকার ইতিহাস গড়েও এই ইতালি তুষ্ট হবে বলে মনে হচ্ছে না। এই ইউরোতে তারা তো প্রত্যাবর্তন গল্প লিখতে এসেছে!

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×