স্পেন-ক্রোয়েশিয়া: আট গোলের এক থ্রিলারে কত কিছু!

স্পেন-ক্রোয়েশিয়া

উৎপলশুভ্রডটকম

২৯ জুন ২০২১

স্পেন-ক্রোয়েশিয়া: আট গোলের এক থ্রিলারে কত কিছু!

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে স্পেন জিতেছে ৫-৩ গোলের থ্রিলার। টুকরো-টুকরো তথ্যে সেই থ্রিলারের সারসংক্ষেপ।

'হোয়াই ডু ইউ লাভ দ্য গেম?'

ধরুন, এমন একদিন। দলের স্ট্রাইকাররা ওপাশে করছেন হতবিহ্বল করে দেওয়া সব মিস, ১৮ বছরের এক ছোড়ার বাড়ানো একের পর এক থ্রু পাস ভেসে যাচ্ছে বানের জলে...এরই মধ্যে গোলরক্ষক করে বসলেন ক্ষমার অযোগ্য এক ভুল। গোলে কোনো শট নেওয়ার আগেই প্রতিপক্ষ এগিয়ে গেল ১-০ গোলে। গোলরক্ষক তখন ভাবতেই পারেন, 'এই দিনটা সম্ভবত আমার না।'

কিংবা ধরুন ওই স্ট্রাইকারের কথা। এন্তার সব মিসের পসরা সাজিয়ে বসেন এমনিতেই; আর যে শটগুলো খুঁজে পায় জালের ঠিকানা, সেগুলোতে তিনি নিজেই ধরা দেন অফসাইডের ফাঁদে। যেমন ধরা দিয়েছিলেন সেদিনও। ওই স্ট্রাইকার তখন ভাবতেই পারেন, 'আজকের দিনেও হচ্ছে না!'

কিন্তু এই যে 'হয় না, হচ্ছে না'-র মধ্যিখানে হঠাৎ করে কিছু একটা হয়ে যায়, যে ম্যাচটা শুরু হয় অমার্জনীয় এক ভুলে, সে ম্যাচেই গোলরক্ষক আটকে দেন দুটো প্রায় হয়ে যাওয়া গোল; গোল করতে ভুলে যাওয়া স্ট্রাইকারও আচমকা এক ভলিতে করে ফেলেন দর্শনীয় এক গোল, খেলা শেষের মিনিট পাঁচেক আগেই 'আর কী হবে' মনে হওয়া ম্যাচটাও রূপ নেয় ৫-৩ গোলের থ্রিলারে, এ জন্যেই না আপনি খেলাটা ভালোবাসেন!

কোপেনহেগেনে হলো তেমনই একটা হয়ে যাওয়া ম্যাচ, আর রচিত হলো কিছু গল্প:

★ ওয়েইন রুনিকে (১৮ বছর ২৪৪ দিন) টপকে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে ইউরোর নক আউট ম্যাচে নামা ফুটবলার এখন পেদ্রি (১৮ বছর ২১৫ দিন)।

★ এই রেকর্ডের দিনেই পেদ্রি গড়েছেন অস্বস্তিকর আরেক রেকর্ড। অবশ্য তাতে তাঁর দায় সামান্যই। গোলে কোনো শট নেওয়ার আগেই  গোলের খাতা খুলে ফেলেছিল ক্রোয়েশিয়া, ৪৯ গজ দূর থেকে বাড়ানো পেদ্রির ব্যাকপাসটা স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বলে। এতেই পেদ্রির আরেক রেকর্ড, ইউরোতে সবচেয়ে দূর থেকে আত্মঘাতী গোলের। সর্বোচ্চ দূরত্বের রেকর্ডটা অবশ্য হতেই হতো, ইউরোতে বক্সের বাইরে থেকেই তো আত্মঘাতী গোল হয়নি এর আগে।

★ এক আসরে সবচেয়ে বেশি আত্মঘাতী গোলের রেকর্ডটা গড়া হয়েছিল আগেই, পেদ্রি তা বাড়িয়ে নিয়ে গেলেন নয়ে। সংখ্যাটা আগের সব আসরের যোগফল!

★ পেদ্রির ওই গোলটা লেখা যেত উনাই সিমোনের নামের পাশেও। তাতে চতুর্থ গোলরক্ষক হিসেবে ইউরোতে আত্মঘাতী গোল করতেন উনাই সিমোন। এবং, এর আগের তিনটি গোলই হয়েছে এবারের ইউরোতে।

★ এবারের টুর্নামেন্টে স্পেনের এর আগের ৬ গোল এসেছিল ছয়জন ভিন্ন খেলোয়াড়ের পায়ে। সেই ধারা ভাঙল পাবলো সারাবিয়ার পায়ে। স্পেনকে ৩৮-মিনিটে সমতায় ফেরানো গোলটি এবারের আসরে তাঁর দ্বিতীয়।

★ পাবলো সারাবিয়ার গোলেই কাটল স্পেনের ৯ বছরের খরা। বড় টুর্নামেন্টের নক আউট ম্যাচে এর আগে স্পেন সর্বশেষ গোল করেছিল ২০১২ ইউরোর ফাইনালে, ইতালির বিপক্ষে ৪-০ গোলে জয়ের ম্যাচে।

★ ২৭-তম ম্যাচে এসে সিজার আজপিলিকুয়েতা পেলেন জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোলের দেখা। রেকর্ড হলো এই গোলেও, সবচেয়ে বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে স্পেনের হয়ে গোল করলেন ইউরোতে (৩১ বছর ৩০৪ দিন)।

★ ২০০৪ ইউরোর পর থেকে হিসাব করলে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে ইউরোর নক আউট পর্বের একই ম্যাচে গোল আর অ্যাসিস্টের কীর্তি গড়লেন ফেরান তোরেস (২১ বছর ১২০ দিন)। ২০০৪ ইউরোতে হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে রেকর্ড গড়ার সময় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বয়স ছিল ১৯ বছর ১৪৬ দিন।

★ প্রথম দল হিসেবে পরপর দুই ইউরো ম্যাচে ৫ গোল করল স্পেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×