জিতলে শুধু সেমিফাইনাল নয়, বেলজিয়ামের ইতিহাসও

ইতালি-বেলজিয়াম

উৎপলশুভ্রডটকম

২ জুলাই ২০২১

জিতলে শুধু সেমিফাইনাল নয়, বেলজিয়ামের ইতিহাসও

শেষ আটেই মুখোমুখি টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দুই দল ইতালি আর বেলজিয়াম। মহারণের আগে পরিসংখ্যান আর ইতিহাসের আয়নায় দুই দলের দ্বৈরথ।

বেলজিয়াম নাকি উৎসবের দেশে রূপ নিয়েছে গত কয়েক দিনে। ব্রাসেলস থেকে শুরু করে ঘেন্ট, বাড়িতে বাড়িতে ঝুলছে জাতীয় পতাকা; রোমেলু লুকাকুর অ্যান্টওয়ার্পের বাড়ির সামনে প্রতিদিনই জমায়েত হচ্ছেন হাজারো সমর্থক; চাওয়া বলুন কিংবা প্রত্যাশা, সব ঘুরপাক খাচ্ছে 'আমরাই হবো চ্যাম্পিয়ন' স্বপ্নে।

শিরোপাজয়ে বেলজিয়ামের পরবর্তী বাধা রবার্তো মানচিনির ইতালি। ফুটবলে কোচের নামটা সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে আদ্যিকাল থেকেই, প্রাণোচ্ছল ফুটবলে ইতালিকে আমূল বদলে দিয়েছেন বলে মানচিনির নামটা বলাবলি হচ্ছে আরও জোরেশোরে। মানচিনির কৌশলই আজ সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ, বেলজিয়াম-জুড়ে মানা হচ্ছে এ কথাই।

লড়াইয়ে নামার আগে বেলজিয়ামকে ভাবতে হচ্ছে চোট সমস্যা নিয়েও। দলের সবচেয়ে বড় দুই তারকা কেভিন ডি ব্রুইনা আর এডেন হ্যাজার্ডের মাঠে নামা নিয়েই তো ঘোর সংশয়।

সব বাধা টপকে বেলজিয়াম ইতালি-জয় করতে পারে কি না, তা জানার জন্য আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। এই 'কী হয়, কী হয়' অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা বরং একটু ইতিহাস আর পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখি, বেলজিয়াম সেখানে আশ্রয় খুঁজতে পারে কি না!

★ এর আগে পাঁচবার বড় টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হলেও নক আউট পর্বে এবারই প্রথম বেলজিয়াম-ইতালি। বেলজিয়াম জয় পায়নি একটিতেও, ড্র করেছে মাত্র একবার।

★ বড় টুর্নামেন্টে কমপক্ষে চারবার খেলেও বেলজিয়াম জয় পায়নি ফ্রান্স আর জার্মানির বিপক্ষেও। বিপরীতে বড় টুর্নামেন্টে জার্মানি (৯) আর অস্ট্রিয়ার (৫) পর বেলজিয়ামের বিপক্ষেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৪) খেলেও হারেনি আজ্জুরিরা।

★ টানা চতুর্থবার ইউরোর শেষ আটে ইতালি। আগের তিনবারই ম্যাচ গড়িয়েছে পেনাল্টি শ্যুট আউটে, ২০১২ ইউরোতে ইংল্যান্ডের টপকে সামনে এগোলেও এর আগে-পরে দু'বারই যাত্রা থেমে গিয়েছিল এখানেই (২০০৮ ইউরোতে বাধা হয়েছিল স্পেন, ২০১৬-তে জার্মানি)।

★ সব মিলিয়ে পাঁচবার পেনাল্টি শ্যুট আউটে গড়িয়েছে ইতালির ম্যাচ, ২০২০ ইউরো শুরুর আগে যা সবচেয়ে বেশি।

★ বড় টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ১৮ ম্যাচে ইতালির জালে একাধিক গোল মাত্র একবারই, ২০১২ ইউরো ফাইনালে। এই ম্যাচগুলোতে ইতালি মাত্র ১৩ গোল খেয়েছে, আট ম্যাচে বলই ঢোকেনি জালে।

★ ইউরোতে সর্বশেষ আট ম্যাচের সাতটিতেই জিতেছে বেলজিয়াম, একমাত্র হার ২০১৬ ইউরোতে ওয়েলসের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে।

★ বিশ্বকাপে দুবার টানা পাঁচ বা এর বেশি ম্যাচ জিতলেও ইউরোতে কখনোই টানা পাঁচ ম্যাচ জেতেনি ইতালি। এবার ইতোমধ্যেই চার ম্যাচ জিতে ফেলেছে দলটি, বেলজিয়াম আশান্বিত হতে পারে এই তথ্য জেনেও।

★ শেষ ষোলোতে বেলজিয়াম বিদায় করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে। নক আউট পর্বে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয় পাওয়া দল শিরোপা জিতেছে পাঁচবারের মাঝে চারবারই। যে একবার ব্যতিক্রম, তা ২০১৬ ইউরোতে ইতালির সৌজন্যেই।

★ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে রবার্তো মার্তিনেজ দায়িত্ব নেওয়ার পর বেলজিয়াম জিতেছে ৪৭টি ম্যাচে। জয়ের মতো গোলও ইউরোপের অন্য যেকোনো দলের চাইতে বেশি (১৭৫)।

★ রবার্তো মার্তিনেজ ও রবার্তো মানচিনি, কোচ হিসেবে ইউরো অভিষেকে দুজনেরই টানা চার ম্যাচে জয়। প্রথম পাঁচটি ম্যাচ জিতে শুধু মিশেল হিদালগোই আছেন ওপরে, ১৯৮৪ ইউরোতে ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে সব ম্যাচেই জিতেছিল হিদালগোর দল।

★ রেড ডেভিলদের জার্সিতে সর্বশেষ সাত ম্যাচে নেমে থরগান হ্যাজার্ড জড়িত ছিলেন ৬ গোলে (৪ গোল, ২ অ্যাসিস্ট)। গোল পেয়েছেন সর্বশেষ দুই ম্যাচেও। আজ গোল করলে তা  হবে মার্ক উইলমটসের পর দ্বিতীয় বেলজিয়ান হিসেবে বড় টুর্নামেন্টের টানা তিন ম্যাচে গোল।

★ প্রথম ইতালিয়ান হিসেবে ইউরোতে টানা তিন ম্যাচে গোল করার হাতছানি মাতেও পেসিনার সামনেও। যদিও বিশ্বকাপও ধরলে রেকর্ডটা ক্রিস্টিয়ান ভিয়েরির, ১৯৯৮ বিশ্বকাপে টানা চার ম্যাচে গোল ছিল যাঁর।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×