`স্পিনাজ্জোলার ম্যাচ`টা স্পেনের হবে?
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ইতালি-স্পেন। ম্যাচের আগে পরিসংখ্যানের আয়নায় দুই দল আর তাদের দ্বৈরথের ইতিহাস।
কেউ বলছেন পুনর্জন্ম, কেউ বা নবজন্ম। তবে দুই পক্ষের বক্তব্যটাই শেষ হচ্ছে একই বিস্ময় ধরে রেখে, 'কী দেখছি!' ইতালির ফুটবল সাফল্য দেখেছে, ব্যর্থতাও কম দেখেনি-- কিন্তু পুরো ৯০ মিনিট জুড়ে একই সুর-লয়-ছন্দ ধরে রেখে ইতালি একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছে, এমনটাও কি কেউ কখনো দেখেছে?
রবার্তো মানচিনি তা-ই দেখাচ্ছেন প্রায় তিন বছর ধরে। এবারের ইউরোতেও যে ধারা থেকে নড়েননি, একমাত্র দল হিসেবে মানচিনির ইতালি জিতেছে সবগুলো ম্যাচ। আজ সেমিফাইনালে জিতলেও নাম লেখাবেন আজেগ্লিও ভিসিনি আর বার্ট ফন মারউইকের পাশে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ইতালির সামনে দাঁড়িয়েছে লুইস এনরিকের স্পেন। পুরো ম্যাচে ছড়ি ঘুরিয়েও গোল মুখ খুলতে গেলেই যাদের বেঁধে যাচ্ছে বিপত্তি। 'কী করলে স্ট্রাইকাররা সহজতম সুযোগগুলো মিস করবেন না'-- কে্উ এই প্রশ্নের উত্তর বলে দিলে তাকে বড় অঙ্কের পুরস্কার দিতেও হয়তো আপত্তি থাকবে না এনরিকের।
আর কি রহস্যের অবসান ঘটবে? কাজটা যথেষ্টই কঠিন, আরও কঠিন হয়েছে অ্যাকিলিস ইনজুরিতে স্পিনাজ্জোলা ছিটকে যাওয়ায়। অবাক হতেই পারেন, এতে স্পেনের আরও সুবিধা হওয়ার কথা না? কোয়ার্টার ফাইনালে চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়া স্পিনাজ্জোলা পরিণত হয়েছেন ইতালিয়ানদের অনুপ্রেরণার উৎসে। ডিফেন্ডার বোনুচ্চি তো বলেই দিয়েছেন, 'স্পিনাজ্জোলার জন্যই আমরা জিততে চাই।'
কে জেতে, কে হারে...তা জানতে তো আর বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এখনই যা জানা যাচ্ছে, সেই ইতিহাসটাতে বরং চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।
★ সর্বশেষ ১৪ সাক্ষাতে স্পেনের বিপক্ষে ইতালির জয় মাত্র দুটি, তা-ও পাঁচ বছরের ব্যবধানে। ২০১১ সালে প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলে জয়ের পর গত ইউরোতে ২-০ ব্যবধানে। পাঁচ বছরের ধারা মেনে আজ কি তৃতীয়?
★ বড় টুর্নামেন্টে স্পেন-ইতালি এই নিয়ে দশমবার, যা ইউরোপীয় দলগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের নয়টি দ্বৈরথে ইতালিরই জয়জয়কার। ড্র হয়েছে ৪ ম্যাচ আর স্পেন জিতেছে মাত্র একটি।
★ নয় ম্যাচের সাতটিই ইউরোতে, যার তিনটি আবার গত তিন আসরের নক আউট পর্বে। ২০০৮ আর ২০১২ সালে ইতালিকে বিদায় করে স্পেন পরে কাপও জিতেছে। ইতালি জিতেছিল ২০১৬-তে।
★ দ্বাদশবারের মতো বড় টুর্নামেন্টের শেষ চারে ইতালি। ইউরোপীয় দলগুলোর মধ্যে শুধু জার্মানিই এর চেয়ে বেশিবার সেমিতে খেলেছে (২০)। আগের ১১ বারের নয় বার ফাইনালে উঠেছে ইতালি, সর্বশেষ চার বারই।
★ এবারের ইউরোতে শতভাগ জয়ের রেকর্ড শুধুই ইতালির, জিতেছে টানা পাঁচ ম্যাচেই। আজও জয় পেলে নাম লেখাবে ১৯৯০ বিশ্বকাপের ইতালি আর ২০১০ বিশ্বকাপের হল্যান্ডের রেকর্ডের পাশে।

★ সর্বশেষ চার আসরে এটি স্পেনের তৃতীয় সেমিফাইনাল। শিরোপা জিতেছে আগের দুবারই (২০০৮ আর ২০১২।
★ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে প্রথম চার ম্যাচেই স্পেন হেরেছিল। তবে এর পরের পাঁচ ম্যাচে স্পেনের হার মাত্র একটি, জয় আর ড্র সমান দুটি করে।
★ ইউরোর ইতিহাসে স্পেনের বিপক্ষেই আত্মঘাতী গোল হয়েছে সবচেয়ে বেশি, ৩টি এবং সবগুলোই ২০২০ ইউরোতে।
★ ইতালির হয়ে সর্বশেষ ১৫ ম্যাচে লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে জড়িত ছিলেন ১৩ গোলে। ৭ গোলের পাশাপাশি সহায়তাও করেছেন ৬ গোলে। বেলজিয়ামের বিপক্ষে নজরকাড়া সোয়ার্ভিং কিকে অসাধারণ সেই গোলের স্মৃতি তো এখনো টাটকাই।
★ দানি অলমো গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছেন ১৬টি, জেরার্ড মোরেনো ১৫টি। আর দুজনেরই গোলসংখ্যা ০। সবচেয়ে বেশি শট নিয়েও গোল নেই, এই তালিকায় এবারের টুর্নামেন্টে তাঁরাই সবার ওপরে।



 
										 
										 
										 
										 
										 
										

 
            





 
						 
						 
						 
						 
						