বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ

সেই স্মৃতি ফিরে আসছে সোহানের মনে

উৎপলশুভ্রডটকম

২৭ আগস্ট ২০২১

সেই স্মৃতি ফিরে আসছে সোহানের মনে

নুরুল হাসান সোহান

চার বছর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক নুরুল হাসান সোহানের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজের আগে সেই স্মৃতি তাঁর মনে ফিরে আসাটাই স্বাভাবিক। নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরুর দিনে আরও অনেক কিছু নিয়েই কথা বলেছেন সোহান। অবধারিতভাবে যাতে এসেছে বায়ো-বাবলের জীবনও।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয় শেষে দিন দশেকের বিরতি। এরপরই ঢুকে যেতে হয়েছে কোয়ারেন্টিনে, আজ থেকে শুরু হয়েছে অনুশীলনও। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু তো সেপ্টেম্বরের প্রথম দিনেই।

নিউজিল্যান্ডকে নুরুল হাসান সোহানের ভোলার কথা নয় এমনিতেই। সব ভোলা গেলেও অভিষেকের স্মৃতি কি আর ভোলা যায়! ২০১৭ সালের ওই সিরিজে জাতীয় দলের ক্যাপ পেয়েছিলেন ওয়ানডে আর টেস্ট ফরম্যাটে, সব ঠিক থাকলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে প্রথম ম্যাচ খেলবেন এবার। প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে জানালেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই সুযোগ পেলে উজাড় করে দেওয়াটাই লক্ষ্য তাঁর, 'আমার যেহেতু ওডিআই ও টেস্ট ডেব্যু নিউজিল্যান্ডের সাথে হয়েছে, যদি দলে সুযোগ পাই তো শতভাগ দিতেই চেষ্টা করব।'

নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলের কেউই নেই এই সিরিজে। দলের আশেপাশে থাকা কিংবা ভবিষ্যতে কিউইদের এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব বর্তাবে যাদের ওপর, এই সিরিজটাকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট নিয়েছে তাদের বাজিয়ে দেখার মঞ্চ হিসেবেই। তবে সোহান খাটো করে দেখতে চান না এই দলকেও, 'অবশ্যই নিউজিল্যান্ড ভালো টিম। আমার কাছে মনে হয় কম্পিটিটিভ একটা সিরিজ হবে। এবং আমার কাছে যেটা মনে হয় যে, টিম হিসেবে যদি আমরা খেলতে পারি তাহলে আমাদের ভালো রেজাল্ট করার সম্ভাবনা ভালো থাকবে।'

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে বাংলাদেশকে জিতিয়েছে বোলিংই। অনুমিতভাবে বোলারদের প্রশংসা শোনা গেল সোহানের কণ্ঠেও, 'বোলিং ইউনিট হিসেবে আমরা ভালো করেছি। মোস্তাফিজ তো অসাধারণ, আমার কাছে মনে হয় সাকিব ভাই, শরিফুল….সবাই খুবই ভালো সাপোর্ট দিয়েছে, মাহেদিও খুব ভালো বোলিং করেছে আমার মনে হয়।'

প্রথম দিনের অনুশীলনে বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি

সহায়ক কন্ডিশনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলাররা ভালো করেছেন, হয়তো ভালো করবেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও। তবে ম্যাচ জিততে তো বোলারদের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দল হিসেবে খেলাটাই তাই গুরুত্ব পাচ্ছে সোহানের কাছে। 'টিম-ম্যান' হিসেবেই পরিচিতি পেয়ে গেছেন সব মহলে, কথাবার্তায়ও রাখছেন তারই প্রমাণ, 'আমার কাছে মনে হয়, ৫০/১০০ করেও যদি টিম হারে, তার থেকে টিমের জন্য উপকার হয় এমন ৫/১০ রান করাই বেশি ইম্পর্ট্যান্ট। যেখানেই সুযোগ পাই না কেন, টিমের জন্য কন্ট্রিবিউট করাই আমার লক্ষ্য। লাস্ট দু্ইটা সিরিজ আমরা টিম হিসেবে খেলতে পেরেছি। এটা যদি কন্টিনিউ করতে পারি, ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু করব।'

মুশফিকুর রহিম ছিলেন না জিম্বাবুয়ে কিংবা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কোনোটাতেই, চোট পেয়ে দলের বাইরে ছিটকে গিয়েছিলেন আরেক উইকেটকিপার লিটন দাসও। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলে ফিরেছেন দুজনই, নুরুল হাসান খেলবেন কি খেলবেন না, খেললেও কয় ম্যাচে, এ নিয়ে প্রশ্ন তাই আছেই। এসব ভেবে-টেবে সোহানের বাড়তি চাপ বোধ করাই স্বাভাবিক। তবে মনে তা থাকলেও সোহানের মুখে তার প্রকাশ নেই। এই বাংলাদেশ দলের সংস্কৃতিটারই বড় ভূমিকা এতে। নইলে সোহান কেন বলবেন, 'বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুম খুব ভালো একটা অবস্থায় রয়েছে। আমরা ১৫ বা ২০ জন, যে কয়জনই (স্কোয়াডে) থাকি, সবাই চাই যে ১১ জন (মাঠে) খেলছে, তারা যেন ভালো করে। টিম হিসেবে ভালো করার জন্য যেটা ইম্পর্ট্যান্ট।'

দল হিসেবে ভালো করার জন্যে মানসিকভাবে সুস্থ থাকাও তো খুব জরুরি। করোনা মহামারীর এই সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ওই মানসিক সুস্থতাই। দিনের পর দিন জৈব-সুরক্ষা বলয়ে থাকা যে খুবই কঠিন, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন সোহানও। তবে ক্রিকেট খেলতে চাইলে তো এভাবেই থাকতে হবে এখন, 'সত্যি কথা বলতে বায়ো-বাবলে থাকা কঠিন। কিন্তু এই সিচুয়েশনে আমাদের এটার সাথে মানিয়ে নেওয়া উচিত। আর আমার মনে হয়, সবাই এটাই করছে। লাস্ট দুটা সিরিজ আমরা বায়ো-বাবলে ছিলাম, তারপর (বাড়ি গিয়ে) রিফ্রেশ হয়ে সবাই আবার আত্মবিশ্বাস নিয়েই প্র্যাকটিসে ফিরেছে। এই সিচুয়েশনেও আমরা ক্রিকেট খেলতে পারছি, এটাই বড় কথা।'

আর কোনো উপায় যখন নেই, তখন তো আশার রেখাটাকেই বড় করে দেখতে হবে।

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×