ইতিহাস কী কয়: ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা?

উৎপলশুভ্রডটকম

১০ জুলাই ২০২১

ইতিহাস কী কয়: ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা?

কোপা আমেরিকার ফাইনালে মুখোমুখি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। ফাইনালের আগে পরিসংখ্যানের আয়নায় দুই দলের দ্বৈরথের ইতিহাস।

শুরুর আগে 'হবে কি হবে না' সংশয় ছিল, করোনা মহামারির এই সময়ে দিন দশেকের নোটিশে ব্রাজিলে কোপা আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ব্রাজিলিয়ানরাই, 'খেলবেন না ব্রাজিলের শীর্ষস্থানীয় ফুটবলাররা' শোনা গিয়েছিল এমন গুঞ্জনও। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে মোটামুটি নির্বিঘ্নেই সমাপ্ত হতে যাচ্ছে কোপা আমেরিকার এবারের আসর। আর সমাপ্তিও তো ঘটছে গোটা বিশ্বের চোখ টেনে। ফাইনালের মঞ্চে মুখোমুখি যখন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার, দৃষ্টি না দিয়ে উপায় আছে!

ফাইনালে ওঠার পথে দুই দলই হজম করেছে তিনটি করে গোল, আর্জেন্টিনার করা ১১ গোলের বিপরীতে ব্রাজিলের গোল ১টি বেশি। নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্রাজিল পাচ্ছে না স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে, ওদিকে আর্জেন্টিনা যে আরও এক ম্যাচে পাবে না ক্রিস্টিয়ান রোমেরোকে, তা-ও অনেকটা নিশ্চিত। নাহ, টুর্নামেন্টে দুই দলের যা হালচাল, তাতে ফাইনালের আগে পরিষ্কার ফেবারিট বলে ঘোষণা করা যাচ্ছে না কোনো দলকেই।

ইতিহাস-পরিসংখ্যান ঘেঁটেই তাহলে দেখা যাক, কোনো একটা দলকে খানিকটা হলেও এগিয়ে রাখা যায় কি না!

★ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ১১২তম সাক্ষাৎ। আগের ১১১ ম্যাচে ৪৬টিতে জয় ব্রাজিলের, আর্জেন্টিনার ৬টি কম। ড্র হয়েছে বাকি ২৫ ম্যাচ।

★ কোপা আমেরিকায় দু'দল মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ৩৪তম বারের মতো। আর্জেন্টিনার ১৬ জয়ের বিপরীতে ব্রাজিলের জয় ১১টিতে। ড্র হয়েছে বাকি ৬ ম্যাচ।

★ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সর্বশেষ চার ম্যাচের দুটিতে হেরেছে ব্রাজিল, কিন্তু দুটিই প্রীতি ম্যাচে। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিল সর্বশেষ হেরেছে ২০০৫ সালে, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে।

★ ১৯৫০ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের হারটা তো পুরাণকাহিনিতেই ঢুকে গেছে। তবে এরপর থেকে মারাকানা স্টেডিয়ামে ২৮টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে ব্রাজিল হারেনি একবারও। ২২ জয়ের বিপরীতে ড্র ৬ ম্যাচে।

★ ঘরের মাটিতে আয়োজিত কোপার সবগুলোই জিতেছে ব্রাজিল। এর দুটি এসেছে মারাকানাতেই (১৯৮৯ ও ২০১৯)। মারাকানায় এসেছিল ২০১৩ ফিফা কনফেডারেশনস কাপের শিরোপাও।

★ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৮ মার্চ ১৯৭০ থেকে ২ জুলাই ১৯৮২ পর্যন্ত টানা ১৩ ম্যাচ হারেনি ব্রাজিল (জয় ৮, ড্র ৫)। আর্জেন্টিনার ক্ষেত্রে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা ৬ ম্যাচের, দুবার। প্রথমবার ১৯২৩-১৯৩৯ (জয় ৫, ড্র ১), দ্বিতীয়বার ১৯৯০-১৯৯৩ (জয় ৩, ড্র ৩)।

★ '৯৩ সালের পর থেকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব, কোপা আমেরিকা মিলিয়ে খেলা ৭ ম্যাচে ব্রাজিলের জয় ৫টিতে। ড্র বাকি ২ ম্যাচ।

★ এ নিয়ে ২৯তম বারের মতো কোপা আমেরিকা প্রথম দুইয়ে থেকে শেষ করবে আর্জেন্টিনা। ২১ বার চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্স আপ হয়ে তাদের পরেই আছে উরুগুয়ে।

নেইমার না মেসি? ছবি: ব্লিচার রিপোর্ট

★ ২১ বারের মাঝে ১৫ বারই অবশ্য শিরোপা-উৎসব করেছে উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৪। ব্রাজিলকে হারিয়ে উরুগুয়েকে ছোঁয়ার সুযোগ আলবিসেলেস্তেদের।

★ লিওনেল মেসির আন্তর্জাতিক গোলসংখ্যা ৭৬। দুই গোলেই পেলেকে ছাড়িয়ে কনমেবলের গোলদাতার তালিকায় সবার ওপরে উঠে যাবেন তিনি।

★ রেকর্ডটা নিজের কাছে কতদিন রাখতে পারবেন, তা নিয়েও অবশ্য সংশয় আছে। নেইমার ১১০ ম্যাচেই গোল করে ফেলেছেন ৬৮টি। তিতের অধীনে ৪০ ম্যাচ খেলে নেইমার অবদান রেখেছেন ৪৫ গোলে। নিজে ২২ গোল করার পাশাপাশি করিয়েছেন ২৩ গোল।

★ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নেইমারের রেকর্ডটা যদিও আলো ঝলমলে নয়, ১০ ম্যাচে গোল মাত্র ৩টি। এই কোপাতেও চলছে গোলখরা, ভালো খেললেও গোল পাননি সর্বশেষ চার ম্যাচে। খরাটা কি ফাইনালেই কাটবে?

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×