ইউনিস খানের একান্ত সাক্ষাৎকার

‘লোকজনের কথায় কান দিলে অহেতুক চাপ বাড়ে’

উৎপল শুভ্র

২৭ মে ২০২১

‘লোকজনের কথায় কান দিলে অহেতুক চাপ বাড়ে’

ইউনিস খান। ছবি: গেটি ইমেজেস

গায়ে তাঁর পাঠান রক্ত এবং সেই উত্তরাধিকার নিয়ে তিনি রীতিমতো গর্বিত। ইউনিস খানের সঙ্গে কথা বললেই আপনি জেনে যাবেন পাঠানরা কেমন হয়! স্বাধীনচেতা, বন্ধুভাবাপন্ন, আক্রমণাত্মক...তবে ইউনিসের সবচেয়ে বেশি যা নজর কাড়ে, তা হলো তাঁর টগবগে ইতিবাচকতা। এই ইন্টারভিউটা করেছিলাম ভারত-পাকিস্তান সিরিজের মাঝখানে। নির্ধারিত সময়ের মিনিট দশেক পর সেরেনা হোটেলের লবিতে নেমে ইউনিস হেসে বলেছিলেন, `কী ভেবেছিলেন, আসব না? আরে, পাঠানরা কথা দিলে কথা রাখে।`

প্রথম প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০০৬। প্রথম আলো।

উৎপল শুভ্র: একটু পেছন থেকে শুরু করি। অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি দিয়ে শুরু; কিন্তু এরপর তো আপনার ক্যারিয়ারে অনেক চড়াই-উতরাই গেছে। দল থেকে বাদও পড়েছেন অনেকবার। এখন আপনি পাকিস্তান দলের সহ-অধিনায়ক, এ পর্যন্ত আসার পথটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

ইউনিস খান: পাকিস্তানে এটাই স্বাভাবিক। এখানে কোনো ব্যাটসম্যান তিনটি ইনিংসে রান না পেলেই তাঁকে বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হয়। দুবছর আগে ইনজামাম-উল হকের অবস্থাটাই মনে করুন না! সবাই বলছিল, 'ও বুড়ো হয়ে গেছে, ওকে দলে রাখা উচিত নয়।' আর আজ ইনজামাম পাকিস্তানের অধিনায়ক, এখনো দলের সেরা ব্যাটসম্যান। আমি ব্যাপারটা জানি বলেই কে কী বলল, তা নিয়ে একদমই মাথা ঘামাই না। সব সময়ই ইতিবাচক চিন্তা করি। আমার হাঁটাচলা দেখলে বুঝবেন আমি সব সময়ই ইতিবাচক। রান না পেলেও কী হলো... প্রথম টেস্টে রান পাইনি, ক্যাচ ফেলেছি, তাই আমাকে বাদ দেওয়ার জন্য চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেল। আরে, আমি দলের ভাইস ক্যাপ্টেন, আমাকে কীভাবে ড্রপ করে? এরপর কী হলো? ওই লোকগুলোই বলতে থাকল, ইউনিসের মতো ব্যাটসম্যান হয় না। গত ভারত সফরে ওরাই আমাকে বড় হিরো বানিয়ে দিল। আমি তাই এসব একেবারেই পাত্তা দিতে চাই না।

শুভ্র: কিন্তু খারাপ সময়ে যখন লোকে বলে ওর পা যায় না, ব্যাকলিফট ঠিক নেই, সবাই টেকনিকে নানা সমস্যা আবিষ্কার করে ফেলে, তখন নিশ্চয়ই খুব রাগ হয়।

ইউনিস: আপনি শেবাগকে দেখুন, ও কীভাবে খেলে! ওর পুরো ব্যাটিংটাই তো চোখ আর হাতের ব্যাপার, পা তো যায়ই না। লারার টেকনিক দেখুন, পন্টিংয়ের দেখুন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দেখুন-- সবার টেকনিকই ভিন্ন। লোকজনের এসবের কথায় কান দিলে অহেতুক নিজের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আর আমি এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

শুভ্র: আপনার নিজের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক কোনটি?

ইউনিস: আমার ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, স্ট্রাইক বদলানো। এ কারণেই ইউসুফ আর শোয়েব মালিকের সঙ্গে ব্যাটিং করতে আমার খুব ভালো লাগে। ওদের রানিং বিটুইন দ্য উইকেট খুব ভালো। আমার ওয়াগন হুইলে দেখবেন, প্রচুর সিঙ্গেল, ২ রান, ৩ রান। আমি শহীদ আফ্রিদির মতো বিগ হিটার নই। ওকে তো দৌড়াতেই হয় না, কিন্তু আমাকে রান করতে প্রচুর দৌড়াতে হয়। আমাকে বলতে পারেন অ্যাথলেটিক ব্যাটসম্যান।

নিজেই জানতেন, সিঙ্গেলস-ডাবলসই তাঁর শক্তির জায়গা। ছবি: এএফপি

শুভ্র: ইমরান খান তো সব সময়ই আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁর সঙ্গে আপনার কী ধরনের কথাবার্তা হয়?

ইউনিস: বিশ্বাস করুন, ইমরান ভাইয়ের সঙ্গে আমার বড়জোর তিন-চারবার দেখা হয়েছে, কোনোবারই দু-তিন মিনিটের বেশি কথা হয়নি। সেটাও মূলত 'ইমরান ভাই, কেমন আছেন', 'ইউনিস, কেমন আছ' এমন কথাবার্তাতেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। আমার ব্যাটিং বা অধিনায়কত্ব-- এসব কোনো কিছু নিয়েই তিনি কথা বলেননি। ও হ্যাঁ, গত ভারত সফরের আগে ক্রিকেট নিয়ে একটু কথা হয়েছিল, তবে সেটিও দু-তিনটি কথার বেশি নয়। তবে ইমরানের প্রশংসাটা আমার জন্য বড় ব্যাপার। কারণ সেই ছোটবেলা থেকেই ইমরান আমার হিরো। আপনি আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের খেলার ভিডিও দেখলে দেখবেন, আমি মাঠে ইমরানের মতো হাঁটতে চেষ্টা করতাম, ব্যাটিংয়ে ইমরানের মতো স্টান্স নিতাম। এখন আর তা না করলেও ইমরান এখনো আমার হিরো, কারণ আমি মনে করি পাকিস্তানে এই একটি লোকই আছেন, যিনি ক্রিকেটটা সত্যিই ভালো বোঝেন এবং সত্যি কথা বলতে ভয় পান না। আর ইমরানের সবচেয়ে বড় গুণ, তিনি খুব আধুনিকমনস্ক। নিজে অধিনায়ক ছিলেন, দারুণ এক অলরাউন্ডার ছিলেন, সেটিও খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। তিনি যখন কথা বলেন, তখন তা বোঝা যায়।

শুভ্র: সে সময় তো টেলিভিশনের এমন জয়জয়কার ছিল না। তাহলে আপনি এমন ইমরান অনুসারী হলেন কীভাবে?

ইউনিস: টেলিভিশনে ইমরানের খেলা খুব বেশি দেখিনি। তবে পেপারে পড়তাম, ম্যাগাজিন থেকে ইমরানের ছবি কেটে রাখতাম। তা ছাড়া তিনি যেহেতু খান, সব খানই তাঁকে ফলো করত। এখন যেমন আমি, ইউনিস খান, পাকিস্তানের সহ-অধিনায়ক, সব খানই আমাকে ফলো করে। আমি ইমরানকে ধ্যানজ্ঞান করেই বড় হয়েছি। মনে আছে, রাতে আমি ইমরানের ছবি নিয়ে ঘুমুতে যেতাম।

শুভ্র: খান মানে তো পাঠান, তা-ই তো? পাঠানদের সম্পর্কে বলা হয়, তাঁরা খুব সাহসী, স্বাধীনচেতা। আসলেই কি আপনারা পাঠানরা অন্যদের চেয়ে আলাদা?

ইউনিস: পাঠানরা অবশ্যই আলাদা। তাঁরা খুব অতিথিপরায়ণ, সাহসী, সৎ। এটা আমি নিজে পাঠান বলে বলছি না, পাঠানদের এলাকায় গেলে আপনিও এর প্রমাণ পাবেন। খেলাধুলায়ও পাঠানরা খুব ভালো। স্কোয়াশ, ফুটবল, হকি–সব খেলায়ই পাকিস্তানের সেরা খেলোয়াড়দের অনেকেই পাঠান।

শুভ্র: আমি পেশোয়ারে গিয়েছি। সেখানকার মানুষ আসলেই খুব অতিথিবৎসল। পেশোয়ারের কোথায় আপনার বাড়ি? এখনো কি সেখানেই থাকেন?

ইউনিস: আমার বাড়ি পেশোয়ারের মারদানে। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে, আমার পেশোয়ারে জন্ম হয়েছে। এখনো সেখানেই আছি, বাকি জীবন সেখানেই কাটাতে চাই। পাকিস্তানে সবাই, বিশেষ করে ক্রিকেটাররা করাচি বা লাহোরকেই ঠিকানা করে নেয়। আমি তা করতে রাজি নই। ২০০১ সালে ইনজি ভাই (ইনজামাম) আমাকে বলেছিলেন, 'ক্রিকেটে এগোতে হলে তোমাকে লাহোরে আসতেই হবে। পেশোয়ারে থেকে তুমি ভালো ক্রিকেটার হতে পারবে না।' কিন্তু আমি রাজি হইনি। আমার পেশোয়ারেই ভালো লাগে। ওটা আমার জায়গা, ওখানে পাঠানরা আমাকে এত ভালোবাসে যে, আমি কোনো দিনই ওদের ছেড়ে আসতে পারব না।

শুভ্র: এই তো সেদিন লাহোরে ১৯৯ রানে রান আউট হওয়ার পরও আপনি বলেছেন, আপনার নাকি মন খারাপ হয়নি। এটা কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য নয়। ১৯৯ রানে রান আউটের চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে!

ইউনিস: আপনিই বলুন, আউট হওয়ার পর আমার ভাবভঙ্গি দেখে কি আপনার অন্য কিছু মনে হয়েছে? বিশ্বাস করুন, আমি সব সময় যেকোনো কিছুর জন্যই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি। আমি প্রথম বলে আউট হয়ে গেলেও আপনি আমাকে দেখে কিছুই বুঝতে পারবেন না। আমি পরে চিন্তা না করে আগে চিন্তা করি। আমি ভাবি, একদিন আমি ২০০, ৩০০, এমনকি ৪০০ রানও করতে পারি, আবার প্রথম বলেই আউটও হয়ে যেতে পারি। আমি সবকিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকি। ১৯৯-এ রান আউট হওয়ার পর তো আমি আফ্রিদির (ব্যাটিং পার্টনার) দিকে একবার ফিরেও তাকাইনি। আমি জীবনে সবকিছুই সহজভাবে নিই। আমি আউট হয়ে গেলেই তো আর পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে না।

১৯৯ রানে রান আউট! লাহোর ২০০৬। ছবি: এএফপি

শুভ্র: এভাবে নিতে পারলে তো ভালোই। তাতে বরং সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ে। কিন্তু চাইলেই তো সবাই সাফল্য-ব্যর্থতা এমন একইভাবে নিতে পারে না। আপনার এই মানসিকতা কীভাবে হলো?

ইউনিস: এটা আমি পরিবার সূত্রেই পেয়েছি। আমি বলব, আমার বাবার কাছ থেকেই। তিনি কী হয়েছে, কী হতে পারত—এসব নিয়ে কখনো মাথা ঘামাতে রাজি ছিলেন না, তাঁর কাছে শুধু ভবিষ্যৎটাই ছিল সত্যি। আমাদের আর্থিক অবস্থা যখন ভালো ছিল না, তখনো তিনি আমাকে বলতেন, 'দেখো, একদিন আমরা গাড়ি কিনব, জমি কিনে বাড়ি বানাব।' আমার সব অভ্যাসই বাবা আর মায়ের কাছ থেকে এসেছে। আমার বাবা মানসিকভাবে খুব শক্ত আর ইতিবাচক ছিলেন। আমার পুরো পরিবারই তাই। আমি কোনো দিন আমার বাবাকে কোনো বিষয়ে অভিযোগ করতে শুনিনি। অনেকে যেমন বলে, তাঁর মুখে কখনো 'পাকিস্তান আমাকে কী দিল' জাতীয় কথাবার্তা শুনিনি।

শুভ্র: এখন আপনি পাকিস্তান দলের সহ-অধিনায়ক। ধরে নেওয়া যায়, একদিন অধিনায়ক হবেন। আপনার অধিনায়কত্বের দর্শনটা কী?

ইউনিস: আমি দুটি জিনিসে বিশ্বাস করি। সব সময় ইতিবাচক থাকতে হবে, আর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। আপনি যদি বলেন, আমরা মনে হয় এই ম্যাচ হেরে যাব, তাহলে আর জিতবেন কীভাবে? নাইনটি টু বিশ্বকাপের কথাই ধরুন না! ইমরান খান ইতিবাচক ছিলেন বলেই পাকিস্তান জিততে পেরেছিল। যদি আপনি আশা খুঁজে নিতে জানেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই কিছুটা হলেও আশা খুঁজে পাবেন। আর আপনি যদি আশা করেন, স্বপ্ন দেখেন, শুধু তাহলেই সাফল্য পাবেন। আমার কাছে এটিই ভালো অধিনায়ক বা ভালো মানুষ হওয়ার উপায়।

শুভ্র: ইনজামামের অধিনায়কত্ব সম্পর্কে কী বলবেন?

ইউনিস: ইনজির ধরনটা আলাদা। তিনি খুব ঠাণ্ডা, সুস্থির। ব্যাটিংয়ের মতো অধিনায়কত্বেও ক্রমশ উন্নতি করার জায়গা থাকে। গত দুটি সিরিজে ইনজামাম অনেক উন্নতি করেছেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, ইনজি চাপের মধ্যে নিয়মিত রান করছেন, যাকে বলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া।

কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, জানতেন উলমার। তাঁকে এজন্যেই পছন্দ করতেন ইউনিস। ছবি: এএফপি

শুভ্র: বব উলমার আসার পর থেকে পাকিস্তান দলে একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এই পরিবর্তনে উলমারের ভূমিকা সম্পর্কে যদি জানতে চাই...

ইউনিস: আমি উলমারের দুটি বড় গুণ দেখি। প্রথমত, তিনি খুব গোছানো। এই উপমহাদেশের মানুষজন খুব গোছানো হয় না। উলমার খুব গুছিয়ে কাজ করেন। দ্বিতীয়ত, খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর কমিউনিকেট করার ক্ষমতাটা অসাধারণ। তিনি যখন ইনজামাম, রাজ্জাক বা আমার সঙ্গে কথা বলেন, তখন একভাবে বলেন। হয়তো বলবেন, 'হ্যালো স্যার, হোয়াট ইউ থিঙ্ক?' আবার সালমান বাটের সঙ্গে কথা বলার সময় ওর পর্যায়ে নেমে আসবেন।

শুভ্র: অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি তো অবশ্যই স্মরণীয়। এরপর আছে গত বছর (২০০৫) ব্যাঙ্গালোরে ২৬৭। এই দুটি ইনিংসই কি আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি স্মরণীয়?

ইউনিস: না, এই দুটি নয়। দুটি ইনিংসই আমার কাছে স্মরণীয়, তবে অন্য দুটি। প্রথমটি ২০০১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অকল্যান্ডে ১৪৯। কারণ আমি তখন দলে কামব্যাক করছিলাম। দ্বিতীয়টি গত বছর কলকাতার সেঞ্চুরি। মোহালিতে প্রথম টেস্টে ব্যর্থতার পর আমাকে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছিল। পরের ইনিংসেই সেঞ্চুরি পাওয়াটা তাই আমার জন্য ছিল বিশেষ কিছু।

শুভ্র: নির্দিষ্ট কোনো বোলার আছে, যাঁকে আপনার সমস্যা বলে মনে হয়?

ইউনিস: আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম মুরালির বিপক্ষে। ওকে আমার জাদুকর বোলার মনে হয়। অথচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমি তিন-চারটি সেঞ্চুরি করেছি। সমস্যার বোলার বললে বলব ম্যাকগ্রার কথা। ব্রেট লি, শোয়েব আখতার এদের বলে যত গতিই থাক না কেন, আমার কোনো সমস্যা মনে হয় না। কারণ ওরা আপনাকে আলগা বল দেবেই; কিন্তু ম্যাকগ্রা অন্য রকম, আপনাকে এক মুহূর্তের জন্যও হাঁফ ছাড়ার সুযোগ দেবে না।

শুভ্র: আপনার চোখে বিশ্বের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান আর বোলার কে?

ইউনিস: আমি যদি কোনো দিন কোনো বই লিখি, তাহলে সেখানে আমার চোখে অলটাইম প্রেট পাঁচ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসবেন ভিভিয়ান রিচার্ডস, ইনজামাম-উল হক, মোহাম্মদ ইউসুফ, ব্রায়ান লারা, রাহুল দ্রাবিড় ও অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। ছয়জন হয়ে গেল, ঠিক আছে, এই ছয়জনই থাক।

ইউনিসের সেরা ছয় ব্যাটসম্যানের তালিকায় জায়গা পাননি টেন্ডুলকার। ছবি: এএফপি

শুভ্র: কী বলছেন, আপনার তালিকায় টেন্ডুলকার নেই!

ইউনিস: না, টেন্ডুলকার নেই। একেক জনের পছন্দ একেক রকম হয়।

শুভ্র: আর পাঁচ বোলার?

ইউনিস: ইমরান, ওয়াকার, ওয়াসিম, মুরালি ও ওয়ার্ন।

শুভ্র: মাঠে তো আপনাকে খুব টগবগে মনে হয়। স্লেজিং-টেজিংও করেন নাকি?

ইউনিস: না, আমি খুব একটা করি না। একবারই করেছিলাম। সেটাও স্টিভ ওয়াহকে! ওর একটা শট আমি পয়েন্টে ডাইভ দিয়ে আটকে দেওয়ার পর ও কিছু কথা বলেছিল। আমিও এগিয়ে গিয়ে কিছু কথা শুনিয়ে দিয়েছি।

শুভ্র: কথাগুলো কী ছিল?

ইউনিস: (হাসি) বাজে কথা।

স্লেজিংটা নাকি কেবল স্টিভ ওয়াহর সঙ্গেও হয়েছিল ইউনিসের। ছবি: অলস্পোর্ট

শুভ্র: ক্রিকেট কি তাহলে আপনার কাছে এখনো জেন্টলম্যানস্ গেমই? এতে স্লেজিংয়ের স্থান আছে বলে বিশ্বাস করেন না?

ইউনিস: তা নয়। যদি আপনার বলে শেবাগ চার-ছয় মারতে থাকে, অথবা ধরুন ব্রেট লি বল করছে আর শহীদ আফ্রিদি একের পর এক ছয় মারছে, তাহলে ব্রেট লির পক্ষে কিছু না বলে থাকা খুব কঠিন। এটাকে আমি দোষের কিছু বলেও মনে করি না। এটা খেলারই অংশ। আমরা সাড়ে ছয় ঘণ্টা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকি, এতটা সময় চুপচাপ থাকাও তো কঠিন। সত্তর আর আশির দশকে তো আরও বেশি স্লেজিং হতো।

শুভ্র: ক্রিকেট থেকে কী পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন?

ইউনিস: স্বপ্ন-টপ্ন নেই। একটা জিনিসই চাই, যত দিন খেলব, যেন মর্যাদার সঙ্গে খেলতে পারি। মর্যাদার সঙ্গেই বিদায় নিতে চাই। এই রেকর্ড করব, সেই রেকর্ড করব--আমার এমন কোনো স্বপ্ন নেই।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×