উইজডেনে তামিমকে নিয়ে যা লিখেছিলাম...

উৎপল শুভ্র

৫ জুন ২০২১

উইজডেনে তামিমকে নিয়ে যা লিখেছিলাম...

২০১০ সালে ইংলিশ সামারের শুরুতে ওই ব্যাটিং দুরূহ কন্ডিশনে টানা দুই টেস্টে দাপুটে সেঞ্চুরির বড় পুরস্কারই পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাক-এর বর্ষসেরা ক্রিকেটারের তালিকায় উঠেছিল তাঁর নাম। ‘ক্রিকেটের বাইবেল’-এর ২০১১ সংস্করণে তামিম ইকবালকে নিয়ে অ্যালম্যানাকের বাংলাদেশ প্রতিনিধি উৎপল শুভ্রর লেখাটির অনূদিত রূপ।

লর্ডসে তাঁর প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানে  আউট হয়ে ফিরেছেন। ড্রেসিংরুমে ঢুকেই অ্যাটেনডেন্টকে বললেন, ‘শুধু সেঞ্চুরির জন্য অনার্স বোর্ড কেন? ফিফটির জন্যও একটা বানাও।’ অ্যাটেনডেন্ট হেসে বললেন, ‘অনার্স বোর্ডে নাম লেখাতে সেঞ্চুরিই লাগবে।’ জবাবে হুট করে বলে দিলেন, ‘আচ্ছা, তা-ই হবে। সেঞ্চুরি না করে আমি এখান থেকে যাচ্ছি না।’ বয়স মাত্র ২১, ইংল্যান্ডে প্রথম সফর, তার ওপর সেটি ইংলিশ মৌসুমের শুরু। 

দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবাল করলেন ১০৩। লর্ডসে কোনো বাংলাদেশির প্রথম সেঞ্চুরি। সেটিও কী সেঞ্চুরি! ১৫ চার আর দুই ছয়ে মাঠ আলো করে মাত্র ৯৪ বলে। ১৯৯০ সালে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের ৮৮ বলে সেঞ্চুরির পর লর্ডসে দ্রুততম। স্ট্রোক-ঝলমল সেই সেঞ্চুরির চেয়ে তামিমের উদ্যাপনটাও কম দর্শনীয় ছিল না। টিম ব্রেসনানের পর পর চার বলে চার, চার, দুই, চার রান নিয়ে ৮৭ থেকে চোখের পলকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যাওয়ার পর ড্রেসিংরুমের দিকে স্প্রিন্ট দিয়ে লাফিয়ে উঠলেন শূন্যে। জার্সির পিঠে নিজের কাল্পনিক নাম দেখিয়ে অনুচ্চারে বললেন, ‘এবার আমার নামটা লেখো।’

লর্ডসে প্রথম ইনিংসে ৫৫ রান করে রান আউট হয়েছিলেন যাঁর ডিরেক্ট থ্রোতে, সেই কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে একটা বাজি ছিল তামিম ইকবালের। ছবি: পিএ ফটোস্

লর্ডসের পর ওল্ড ট্রাফোর্ডও আলো হলো তামিমের ব্যাটের ছটায়। আরেকটি সেঞ্চুরি। লর্ডসের চেয়ে ছয় বল বেশি লেগেছে, তবে এটিকেই এগিয়ে রাখতে চান তামিম, ‘লর্ডসের সেঞ্চুরিটা অনেক বেশি আবেগময় ছিল। লর্ডস বলে কথা! তবে ওল্ড ট্রাফোর্ডে আমি অনেক ভালো ব্যাটিং করেছি। চ্যালেঞ্জটাও অনেক বড় ছিল। লর্ডসে বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে আউট হওয়ার পরই জানতাম, পরের দুই ইনিংসে ওরা বাউন্সারের বন্যা বইয়ে দেবে। তা-ই হয়েছে। কিন্তু আমি সেদিন যেমন জেদ নিয়ে ব্যাটিং করেছি, এমন জীবনেও করিনি। নিজেই নিজেকে বলেছি, যদি হাড়গোড় ভেঙেও যায়, যদি মরেও যাই, আমি জায়গা ছাড়ছি না। বাধ্য হয়ে ওদের প্ল্যান বদলাতে হয়েছে। এটাও ছিল একটা বড় জয়।’ 

ওই ইনিংসের সময়, বিশেষ করে ইনিংসটি খেলার পর সবার আগে তামিম ইকবালের কার কথা মনে পড়েছে জানেন? তিনি তখন মাঠেই ছিলেন। কেভিন পিটারসেন। ‘চট্টগ্রাম টেস্টে যখন খুব মারছিলাম, পিটারসেন বলেছিল, “এখানে তো খুব মারছ, ওল্ড ট্রাফোর্ডে আসো, মজাটা টের পাবে।” আমি কথাটা তখন বুঝতেই পারিনি। লর্ডসে টেস্ট ম্যাচ আছে জানতাম, ওল্ড ট্রাফোর্ডেও যে আছে, সেটি তখন জানতাম না। পরে টিমমেটদের জিজ্ঞেস করার পর জানলাম, ওল্ড ট্রাফোর্ড ইংল্যান্ডের দ্রুততম উইকেট, ওখানে বল খুব সুইং করে।’

এই উদযাপন ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেঞ্চুরির পর। ছবি: এএফপি

লর্ডসে তামিমের ব্যাটিংয়েও আরেক ইংলিশ ক্রিকেটারের বড় ভূমিকা ছিল। ওই টেস্ট চলাকালীন টেলিভিশনে বাংলাদেশের টেস্ট খেলাটাকে অনধিকার চর্চা দাবি করে জিওফ বয়কটের চাঁছাছোলা মন্তব্য আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল তামিমের গায়ে, ‘জিওফ বয়কট অনেক বড় খেলোয়াড় ছিলেন। ওনাদের মতো খেলোয়াড়দের কাছ থেকে আমরা উত্সাহ আশা করি। আমি হোটেলে আমার রুমে একাই টেলিভিশন দেখছিলাম। কথাটা শোনার পর এত খারাপ লেগেছিল যে, কী বলব! রাতে ঠিকমতো ঘুমুতে পারিনি। আপনি একটা চকলেট ফ্যাক্টরি দিলে ১০ বছরের মধ্যেই ক্যাডবেরির সঙ্গে টক্কর দিতে পারবেন না। পরদিন সেঞ্চুরিটা করার পর মনে হলো, যাক্, আমাকে মুখে কিছু বলতে হলো না।’

শুধু জিওফ বয়কটকে কিছুটা হলেও জবাব দেওয়া গেছে বলেই স্মরণীয় নয় লর্ডসের ওই সেঞ্চুরি। তামিমের কাছে সেটি ‘আবেগময় অভিজ্ঞতা’ হয়ে থাকার মূলে প্রয়াত বাবার স্মৃতি, ‘লর্ডসে সেঞ্চুরিটা স্পেশাল আব্বুর জন্য। আব্বু ক্রিকেটের পাগল ছিলেন, ছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের নিবিষ্ট অনুসারী। টেলিভিশনে লর্ডসের খেলা দেখালেই আমাদের বলতেন, “দেখো, এখান থেকেই ক্রিকেট শুরু হয়েছে।” সেই লর্ডসে সেঞ্চুরির পর আব্বুকে তাই খুব মিস করেছি।’
তামিম ইকবালের বাবা ইকবাল খান মারা গেছেন ২০০০ সালে। তবে বাবার সবচেয়ে আদরের সন্তান তামিমের কেন যেন মনে হয়, মৃত্যুর ওপারের রহস্যময় জগত্ থেকেও বাবা দেখছেন তাঁর ক্রিকেটীয় কীর্তি। সেটিই তাঁর নিত্য অনুপ্রেরণা, ‘আমি ক্রিকেট খুব ভালোবাসি। তার পরও বলব, আমি নিজের জন্য যতটা ভালো করতে চাই, তার চেয়ে ভালো করতে বেশি চাই আব্বুর জন্য। বলতে পারেন, উনার স্বপ্ন পূরণের জন্যই আমি ক্রিকেট খেলি।’

লর্ডসে সেদিন `লর্ড` তামিম ইকবাল। ছবি: গেটি ইমেজেস

১৯৮৯ সালের ২০ মার্চ চট্টগ্রামে তামিম ইকবাল খানের জন্ম ক্রিকেটময় এক পরিবারে। আশৈশব ক্রিকেটকে সঙ্গী করেই বেড়ে ওঠা। যে কারণে প্রথম কবে ব্যাট হাতে নিয়েছিলেন, সেটি মনেই করতে পারেন না। বাবা ছিলেন সাবেক ফুটবলার ও কোচ, কিন্তু তাঁর কাছে ক্রিকেট ছিল এক আবেগের নাম। একান্নবর্তী পরিবারে চাচারাও সবাই ক্রিকেটেই মজে ছিলেন। তাঁদেরই একজন, আকরাম খান বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছেন। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ে নেতৃত্ব দিয়ে ক্রিকেটকুলীন সমাজে বাংলাদেশের ঠাঁই করে দেওয়ায় বড় ভূমিকাও তাঁর।

আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার আনন্দে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছিল উত্সবের দেশে। চট্টগ্রামে উত্সবের কেন্দ্রবিন্দু ছিল আকরাম খানের মানে তামিমদের বাড়ি। আট বছর বয়সী তামিমের মনে লুকিয়ে থাকা ক্রিকেট স্বপ্নের বীজটার অঙ্কুরোদ্গমও তাতেই, ‘ওই স্মৃতি কোনো দিন ভোলার নয়। হাজার হাজার মানুষ সকাল-বিকেল আমাদের বাড়িতে আসছে। চলছে রং খেলা। বিশ্বাস করবেন কি না, আমাদের ঘরের মেঝেতে দুই ফুট রঙের পানি জমে গিয়েছিল। সেদিন থেকেই আমার মনে একটা স্বপ্ন পাখা মেলতে শুরু করে—একদিন আমিও বড় ক্রিকেটার হব। আমার জন্যও মানুষ এমন নাচবে-গাইবে, আনন্দ করবে।’

যতটা না সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে, তার চেয়ে বেশি ব্যাট-বলের আনন্দসুধার স্বাদ পেয়েই তামিমের রাত-দিন ক্রিকেটময় হয়ে গেল এর পর থেকে। বাড়ির সামনে সোজা একটা লম্বা গলি। সকাল-বিকেল সেখানে ক্রিকেট খেলা। বল এদিক-ওদিক গেলে হারিয়ে যাওয়ার ভয় আর বল হারিয়ে গেলেই আউট। বাধ্য হয়েই তাই সোজা মারার চেষ্টা করতে হতো। নিজের অজান্তেই ব্যাটিংয়ের প্রাথমিক শিক্ষাটা রপ্ত হয়ে গেল তামিমের। 

২০১১ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাক। তামিম ইকবালের যা খুব যত্ন করে রেখে দেওয়ার কথা

তামিমদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে স্টেডিয়ামের বাইরে আউটার স্টেডিয়াম নামে পরিচিত মাঠটিতে তামিমের উত্তরণ হলো কিছুদিনের মধ্যেই। ‘ওই মাঠে একসঙ্গে অনেক ম্যাচ হতো। সবচেয়ে ভালো জায়গাটা পাওয়ার জন্য আমি সকাল ছয়টায়ই ওখানে স্টাম্প-টাম্প গেড়ে বসে থাকতাম। উত্তেজনায় রাতে ঘুমই হতো না। ভয় হতো, যদি বৃষ্টি হয়! রাত দুইটা-তিনটার সময় আকাশে তাকিয়ে দেখতাম, তারা আছে কি না। কার কাছে যেন শুনেছিলাম, আকাশে তারা থাকলে বৃষ্টি হয় না।’

খেলা চলত বাড়ির ছাদেও। এমনকি রাতেও। ছেলেদের ক্রিকেট-পাগলামি দেখে তামিমের বাবা ছাদের চারপাশে নেট লাগিয়ে লাইট-টাইটের ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন। সেখানে পাশের বাড়ির ছেলেদের সঙ্গে কল্পিত ‘অ্যাশেজ’-এর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ এখনো মনে পড়ে তামিমের। 

পরিবারের দ্বিতীয় টেস্ট ক্রিকেটার, চার বছরের বড় ভাই নাফিস ইকবালের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ক্রিকেট নিয়ে তামিমের শৈশবস্মৃতি। ১৯৯৬ সালে উপমহাদেশে বিশ্বকাপ, সেই আঁচ স্বাভাবিকভাবেই এসে লেগেছিল বাংলাদেশের গায়ে। চট্টগ্রামের খান পরিবারে তো অবশ্যই। ‘আমাদের বাড়িতে বাবা-চাচা-ফুফু-ফুফা সবাই মিলে একসঙ্গে টেলিভিশনে খেলা দেখতেন। এক দিন ম্যাচ শুরুর আগে ভাইয়া (নাফিস ইকবাল) আমাকে বলল, “আজ শ্রীলঙ্কার খেলা, ওদের একটা প্লেয়ার আছে, খুব মারে।” সেই প্রথম আমি মন দিয়ে খেলা দেখলাম। সেদিন থেকেই আমি সনাৎ জয়াসুরিয়ার...ফ্যান হয়ে গেলাম।’

উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাকে তামিম ইকবালকে নিয়ে উৎপল শুভ্রর লেখা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যে সহজ বস্তু নয়, তামিমকে এই উপলব্ধিও প্রথম উপহার দিয়েছিল এই শ্রীলঙ্কাই। ২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ আবির্ভাবেই দুর্দান্ত স্ট্রোক প্লেতে ভারতকে ছত্রখান করে দেওয়ার পর শ্রীলঙ্কা সফরে মারতেই ভুলে গেলেন তামিম। ‘বিশ্বকাপে একটু ভালো করেছি বলে সব দলই আমার ব্যাটিং নিয়ে কাটাছেঁড়া করেছে। তখন আমার ব্যাটিংয়ে অনেক দুর্বলতা ছিল। শ্রীলঙ্কাও আমার দুর্বল জায়গাটা বের করে শুধু পাঁজরে বল করে গেছে। তখন আমি লেগ সাইডে পুরো জিরো, মারব কী করে!’

সেই অসহায় অভিজ্ঞতায় তামিমের বড় একটা উপকারও হয়েছে। বুঝতে পেরেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বড় কঠিন ঠাঁই, এখানে কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। ‘এমনও হয়েছে, জাতীয় দলের ট্রেনিং দুইটা থেকে আর আমি সকাল নয়টা থেকে একটা পর্যন্ত একাই ইনডোরে ব্যাটিং করেছি। বোলিং মেশিনের বল লেগে লেগে আমার শরীরের ডান পাশে কালো কালো দাগ হয়ে গেছে। এভাবেই আমার দুর্বলতম দিকটা এখন সবচেয়ে বড় শক্তি...হয়ে গেছে।’
পারফরম্যান্সেও সেটির প্রমাণ। ২০১০ সালে ১৪ টেস্ট ইনিংসের ৯টিতেই পঞ্চাশ পেরিয়েছেন। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তামিমের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটির দেশের বাইরে বাংলাদেশকে প্রথম টেস্ট জেতানোয় বড় ভূমিকা।

বর্ষসেরা ক্রিকেটারদের একজন হিসেবে উইজডেন অ্যালম্যানাকে ছাপা হওয়া তামিম ইকবালের ছবি

মিরপুরে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি এখন পর্যন্ত তাঁর সর্বোচ্চ, ভারতের বিপক্ষে ঢাকায় সেই ১৫১ এসেছিল মাত্র ১৮৩ বলে। তবে তামিম এগিয়ে রাখছেন ইংল্যান্ডে পর পর দুই টেস্টে সেঞ্চুরি দুটিকেই, ‘আত্মবিশ্বাসের দৃষ্টিকোণ থেকে ওই দুটি সেঞ্চুরিকে আমি আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্টই বলব। ইংল্যান্ডে খেলা, তাও আবার মে মাসে, সেখানে ইংলিশ বোলিংয়ের বিপক্ষে পর পর দুই টেস্টে সেঞ্চুরির সবচেয়ে বড় অবদান ‘ওখানে যদি এমন পারি, আবার তা পারব না কেন’—এই বিশ্বাস।’

ক্রিকেটই এখন ধ্যানজ্ঞান, ক্রিকেটই স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের সীমানাটা অনেক দূর বিস্তৃত। ‘আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আজগুবি সব কল্পনা করি—যদি একশটা একশ মেরে দিই, কেমন হবে! যদি ৪০০-৫০০ করে ফেলি! স্বপ্ন দেখি, দুই ওভারে হয়তো ৬০ রান দরকার, বাংলাদেশকে এমন একটা ম্যাচ জিতিয়ে দিলাম!’

তামিম ইকবাল ‘আজগুবি’ বলছেন বটে। তবে তামিম ইকবালের ব্যাটিং যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা হয়তো এসবও সম্ভব বলেই মানবেন।

আরও পড়ুন:

তামিম ইকবালের 'ইংলিশ সামার'

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×